বনশ্রীতে ট্রাফিক সচেতনতা মূলক অংশীজন সভা অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

শনিবার, ১১ নভেম্বর ২০২৩, রাত ১০:২৮


“আমি যেন ট্রাফিক অব্যবস্থাপনার কারণ বা দায়ী না হই” ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান, -এই উক্তিকে উপজীব্য করে মতিঝিল ট্রাফিক বিভাগ ও বনশ্রী সোসাইটির উদ্যোগে সোসাইটির মিলনতায়নে ট্রাফিক সচেতনতামূলক অংশীজন সভা অনুষ্ঠিত হয়।

১১ নভেম্বর শনিবার সকালে বনশ্রী সোসাইটির মিলনতায়নে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্টার মোঃ শফিকুল করিম শফিকের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মোঃ মুনিবুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্রাফিক-মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ মইনুল হাসান। অনুষ্ঠানে বনশ্রী সোসাইটির সভাপতি মোঃ আবুল কালাম ও মিডিয়ার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।


উল্লেখ্য, ট্রাফিক-মতিঝিল বিভাগের রামপুরা ট্রাফিক জোনের অন্তর্গত বনশ্রীতে চার লক্ষ মানুষের বসবাস। সেখানে একাধিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা, হাসপাতাল, বিপনি-বিতান, অসংখ্য ফুড কোর্ট গড়ে উঠেছে। এমন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত এলাকায় যানবাহন ও জনসংখ্যার আধিক্য পরিলক্ষিত হয়। বনশ্রী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শাখা থেকে মেরাদিয়া ও তদসংলগ্ন এলাকায় (১ কিলোমিটারের অধিক জায়গা জুড়ে) কোন রোড বিভাজক না থাকায় বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটে। এছাড়া রামপুরা, বনশ্রী, মেরাদিয়া দিয়ে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার রোড বাইপাস হওয়ার কারণে সার্বক্ষণিক বিমানের জেট ফুয়েল পরিবহন ও নানা ধরনের যানবাহন চলাচল করে। সভায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, ঢাকা মহানগরীকে আমরা আরো বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এজন্য আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। আমরা ঢাকা শহরকে তারবিহীন নগরীতে পরিণত করতে চাই।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মোঃ মুনিবুর রহমান বলেন, ঢাকা শহরে প্রায় ২ কোটি ২৪ লাখ লোক বসবাস করে। সবাই কোন না কোনভাবে ট্রাফিক ব্যবস্থার সাথে জড়িত। একটি শহরের সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হলে সেই শহরের মোট আয়তনের ২৫ শতাংশ সড়কের জন্য বরাদ্দ রাখতে হয়। আর যদি জনসংখ্যা ২ কোটির বেশি হয় তাহলে ৩০ শতাংশ রবাদ্দ রাখতে হয়। কিন্তু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য ঢাকা শহরে বরাদ্দ আছে মাত্র ৭ শতাংশ, তার মধ্যে ব্যবহার উপযোগী মাত্র ৪-৫ শতাংশ। সুতারং ঢাকা শহরে সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা খুবই চ্যালেঞ্জিং। তার উপরে জনবল খুবই অপ্রতুল।


তিনি বলেন, আমাদের সবাইকে রাস্তায় চলাচলে আরো সচেতন হতে হবে। ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে। রাস্তা পারাপারের জন্য ফুটওভার ব্রিজ, জেবরা ক্রসিং ইত্যাদি ব্যবহার করতে হবে।


তিনি ট্রাফিক রামপুরা জোনের সঙ্গে বনশ্রী সোসাইটির কমিউনিটি পুলিশিংসহ বনশ্রীর সম্মানিত নাগরিকদের সঙ্গে সমন্বয়ের ব্যাপারে জোর দেন। তিনি বলেন, ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা যাতে না চলতে পারে সেজন্য সবাইকে সচেষ্ট থাকতে বলেন।

মতিঝিল ট্রাফিক বিভাগের বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মোঃ মইনুল হাসান বলেন, বনশ্রী সোসাইটি কর্তৃক ট্রাফিক কমিউনিটি পুলিশ মোতায়ন এবং সিসিটিভি স্থাপনের মাধ্যমে আগামী দিনে এই এলাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সুসংহত করা হবে।ব্যাটারিচালিত রিক্সা যাতে এই এলাকায় চলতে না পারে তার জন্য তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এবং এই লক্ষ্যে কমিউনিটি পুলিশসহ সকলের ভূমিকা জরুরি বলে তিনি মন্তব্য করেন। এছাড়াও তিনি ডিএমপি কমিশনারের উক্তি “আমি যেন ট্রাফিক অব্যবস্থাপনার কারণ বা দায়ী না হই” এর প্রতি গুরুত্বরোপ করেন। বনশ্রী সোসাইটির সভাপতি আবুল কালাম এলাকার সুশৃঙ্খল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য ট্রাফিক রামপুরা জোনের সকল অফিসার ও সদস্যকে ধন্যবাদ দেন।

অনুষ্ঠান শেষে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মোঃ মুনিবুর রহমান বনশ্রী সোসাইটি কর্তৃক স্থাপিত রোড কোন ও রোড ডিভাইডার উদ্বোধন করেন। উক্ত টাফিক কোন এবং রোড ডিভাইডার যানজট নিরসন ও দুর্ঘটনা কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এসময় উপস্থিত এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সাধারণ মানুষ ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রমের প্রশংসা করেন।

এমএসি/আরএইচ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়

Link copied